উৎস অনুসারে বাংলাদেশের প্রকাশিত পরিসংখ্যানের প্রকারভেদ বর্ননা

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ১ম পত্র | | NCTB BOOK
3
3

উৎস অনুসারে বাংলাদেশের প্রকাশিত পরিসংখ্যানের প্রকারভেদ

বাংলাদেশে প্রকাশিত পরিসংখ্যান বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। উৎস অনুসারে এই পরিসংখ্যানগুলোকে প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত করা যায়:


১. প্রাথমিক উৎসের পরিসংখ্যান (Primary Data Sources)

প্রাথমিক উৎস থেকে সংগৃহীত পরিসংখ্যান হলো সরাসরি তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডেটা। এই ধরনের ডেটা গবেষণার জন্য মূল উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • সরাসরি মাঠ পর্যায়ে বা উৎস থেকে সংগৃহীত।
  • সাধারণত নির্ভুল এবং নির্দিষ্ট গবেষণা উদ্দেশ্যে তৈরি।

উদাহরণ:

  • বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS):
    জনগণনা, কৃষি জরিপ, শ্রমশক্তি জরিপ।
  • স্থানীয় সরকার সংস্থা:
    ভূমি রেকর্ড, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন।
  • অধিকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের জরিপ:
    সরকারি প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত জরিপ।

২. মাধ্যমিক উৎসের পরিসংখ্যান (Secondary Data Sources)

মাধ্যমিক উৎসের পরিসংখ্যান হলো পূর্বে সংগৃহীত এবং প্রকাশিত ডেটা যা গবেষণা, বিশ্লেষণ বা নীতিনির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • অন্যদের দ্বারা সংগৃহীত ও প্রকাশিত ডেটা পুনরায় ব্যবহার করা হয়।
  • সাধারণত দ্রুত এবং সহজলভ্য।

উদাহরণ:

  • সরকারি প্রতিবেদন:
    বার্ষিক অর্থনৈতিক সমীক্ষা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন।
  • আন্তর্জাতিক সংস্থা:
    জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ-এর প্রকাশিত পরিসংখ্যান।
  • গবেষণা প্রতিষ্ঠান:
    বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (BIDS), সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (CPD)।
  • গণমাধ্যম ও প্রকাশনা:
    সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনে প্রকাশিত অর্থনীতি ও সমাজ সংক্রান্ত তথ্য।

প্রকারভেদ অনুযায়ী উদাহরণসমূহ

১. অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান:

  • প্রাথমিক উৎস:
    শিল্প উৎপাদন জরিপ, কৃষি উৎপাদন জরিপ।
  • মাধ্যমিক উৎস:
    অর্থনৈতিক সমীক্ষা, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট।

২. জনসংখ্যা ও জনসংখ্যা সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান:

  • প্রাথমিক উৎস:
    জনগণনা রিপোর্ট, শ্রমশক্তি জরিপ।
  • মাধ্যমিক উৎস:
    জাতিসংঘের জনসংখ্যা প্রতিবেদন।

৩. সামাজিক পরিসংখ্যান:

  • প্রাথমিক উৎস:
    স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের জরিপ।
  • মাধ্যমিক উৎস:
    ইউনিসেফ বা UNESCO-এর প্রতিবেদন।

উৎসভিত্তিক পরিসংখ্যান ব্যবহারের গুরুত্ব

  1. নীতিনির্ধারণ:
    নির্ভুল পরিসংখ্যান উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে।
  2. গবেষণা ও বিশ্লেষণ:
    গবেষণার জন্য নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  3. তুলনা ও প্রবণতা বিশ্লেষণ:
    মাধ্যমিক পরিসংখ্যান ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তনের বিশ্লেষণ করা যায়।
  4. জবাবদিহিতা:
    সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সারসংক্ষেপ

উৎস অনুসারে বাংলাদেশের প্রকাশিত পরিসংখ্যানকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক উৎসে ভাগ করা যায়। প্রাথমিক উৎস সরাসরি মাঠ পর্যায় থেকে সংগৃহীত, যেমন জনগণনা ও জরিপ। মাধ্যমিক উৎস পূর্বে সংগৃহীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যেমন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদন ও গবেষণা নিবন্ধ। এই তথ্য দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও গবেষণার জন্য অপরিহার্য।

Content added By
Promotion